মওদুদ আহমদসহ শীর্ষ নেতাদের আটকের প্রতিবাদে হরতাল আরো ১২ ঘণ্টা বাড়িয়েছে বিএনপি।
ফলে রোববার সকাল থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে হরতাল চলবে। আটক নেতাদের মুক্তি দাবিতে শনিবারও হরতাল চলছে পাঁচ জেলায়।শনিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হরতালের সময় বাড়ানোর কথা জানান।“সরকার নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে। অনেকে নেতার বাসায় বাসায় পুলিশ হানা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে ঘোষিত টানা হরতালের কর্মসূচি ১২ ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত দুই সপ্তাহে তিন দিন করে ছয় দিন হরতালের পর রবি থেকে মঙ্গলবার ৭২ ঘণ্টার জন্য একই কর্মসূচি দিয়েছিল ১৮ দল।শুক্রবার বিকালে ওই ঘোষণা দেয়ার পর রাতে আটক হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার ও রফিকুল ইসলাম মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।এছাড়া রাজধানীতে বিএনপির বিভিন্ন নেতার বাড়িতেও পুলিশ অভিযান চালায়।
রিজভী জানান, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল মান্নান, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে।বিরোধী দলের আন্দোলন নস্যাতে কর্মীদের ‘ভয়’ পাইয়ে দেয়ার উদ্দেশে সরকার এই কাজ করছে, বলেন তিনি।
সরকারকে সতর্ক করে রিজভী বলেন, “তারাধরাকে সরা জ্ঞান করছে। তারা ভেবেছে, জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করে জাতিকে মুখ ও বধির দেবে, এটা হবে না।
“তাদের পতনের শেষ সাইরেন বেজে গেছে। এই সরকারের পতনের জন্য গ্রামে-গঞ্জে-ইউনিয়ন-ওয়ার্ডে আজ মানুষ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে।”
দমন-পীড়নে বিরোধী দলের নেতা ও কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলেও দাবি করেন পুলিশি ঘেরাওয়ের মধ্যে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানকারী রিজভী।
নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মতো গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ও পুলিশ ঘিরে রেখেছে। কোনো নেতা-কর্মীদের কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না বলে জানান রিজভী।শুক্রবার মধ্যরাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পথে মিন্টু ও শিমুল বিশ্বাসকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
রিজভী বলেন, “আমি দপ্তরের দায়িত্বে। আমি কিভাবে কার্যালয়ে ঢুকলাম, সেজন্য অফিসের কর্মীদের পুলিশ ধমক দিচ্ছে। এটা নজিরবিহীন ঘটনা।”নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের পর ভোররাতে দলীয় কার্যালয়ে ঢোকেন রিজভী।
ওই সময় তাকে আটকের জন্যও পুলিশ তৎপর ছিল দাবি করে তিনি বলেন, “গভীর রাতে আমি যখন প্রেসক্লাব থেকে বেরুতে যাই, তখন পুলিশ ধাওয়া করে।”
বিরোধী দলের ওপর দমনপীড়ন বন্ধে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব। সেই সঙ্গে মানবাধিকার সংগঠন, গণমাধ্যম ও আইনজীবীদের সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।